প্রিয় জামালপুরে অবস্থানরত সকল বয়সের মানুষ জন কোন কিছু মানছে না। - Jamalpur Desk

Latest

JAMALPUR DESK NEWS MEDIA WEB SIT.

BANNER 728X90

Saturday, July 11, 2020

প্রিয় জামালপুরে অবস্থানরত সকল বয়সের মানুষ জন কোন কিছু মানছে না।

 জামালপুরে অবস্থানরত সকল বয়সের মানুষ জন কোন কিছু মানছে না।
প্রিয় জামালপুরে অবস্থানরত সকল বয়সের মানুষ জন কোন কিছু মানছে না।
 করোনাভাইরাস কি, এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে কি কি করতে হবে।তা মোটামুটি সবারই জানা হয়ে গেছে।
 আরেকটা কথা আজকের আমার লেখায় যারা বিশেষ করে জামালপুরের সকল সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জেলার স্বাস্থ্যবিভাগ, জেলার পুলিশ বিভাগ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক, রেডক্রিসেন্ট, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, বিভিন্ন এনজিও, সেবা সংস্থার যারা করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
 তারপরও তাদের সকলের এবং সাধারণ মানুষদের সবাইকে আরো বেশি সচেতনতার লক্ষ্য নিয়েই আমার এই লেখা।

  জামালপুর জেলায় করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি:
তার আগে জামালপুর জেলায় করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি জেনে নেই। ৯ জুলাই পর্যন্ত জামালপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সর্বমোট ৬৯২ জন। এর মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৯০ জন।এছাড়া মেলান্দহ ৮১, মাদারগঞ্জ ৪২, ইসলামপুর ১১৭, সরিষাবাড়ী ৭৭, দেওয়ানগঞ্জ ৩৬, বকশীগঞ্জে ৬২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ১১ জন।প্রতিদনই যুক্ত হচ্ছে নতুন করে আক্রান্তরা।
এই পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে জামালপুর সদর উপজেলা ও জামালপুর পৌরসভা এলাকায় সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস।
 জামালপুর পৌরসভার মানচিত্রে খুবই শক্তভাবে ছোবল দিয়েছে করোনা ভাইরাসে:
 এককথায় অন্যান্য উপজেলার চাইতে জামালপুর সদর উপজেলা ও জামালপুর পৌরসভার মানচিত্রে খুবই শক্তভাবে ছোবল দিয়েছে করোনাভাইরাস। পৌরসভার রশিদপুর, চন্দ্রা, হাটচন্দ্রা, পাথালিয়া, রামনগর, তিরুথা, ফুলবাড়িয়া, পশ্চিম ফুলবাড়িয়া, বজরাপুর, ডাকপাড়া, কাছারিপাড়া, মুসলিমাবাদ বোসপাড়া, আরামবাগ, মৃধাপাড়া, লাঙ্গলজোড়া, বেলটিয়া, বাগানবাড়ি, চালাপাড়া, পিলখানা, সরদারপাড়া, পাঁচ রাস্তার মোড়, কলেজগেট, নয়াপাড়া, দেওয়ানপাড়া, আমলাপাড়া, লিচুতলা, বকুলতলা, খামারবাড়ি এলাকার সাধারণ মানুষসহ পোস্ট অফিস, ডিসি অফিস, এসপি অফিস, র‌্যাব অফিস, সদর থানা, সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিস, জামালপুর পৌরসভা কার্যালয়, বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও মার্কেটের দোকানপাট শো-রুমসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন, হচ্ছেন। এছাড়া সদর উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন যেমন শাহবাজপুর, রশিদপুর, দিগপাইত, তিতপল্লা, কেন্দুয়া, মেষ্টা, শ্রীপুর, রানাগাছা, ইটাইল, ঘোড়াধাপ, নরুন্দি, বাঁশচড়া, লক্ষ্মীরচর, তুলসীরচর, শরিফপুর ইউনিয়নেও অনেকেই করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন, হচ্ছেন।
 মানছে না জামালপুরের মানুষ কোন কিছু:
এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জামালপুর সদর ও জামালপুর পৌরসভার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নিতে যাচ্ছে। হোম আইসোলেশরে থাকা করোনার রোগীদের সঠিক নিয়ম না মানার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির দ্বারা একই পরিবারে বা প্রতিবেশীদের মাঝেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
 করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে :
কারণ জামালপুর শহরের মানুষের জীবনযাত্রা চলছে ফ্রি-স্টাইলে। রাত পোহালেই হাজার হাজার মানুষের সমাগম সমাবেশ দেখা যাচ্ছে বাজারে বা বিভিন্ন জায়গাতে। চলছে হাজার হাজার বিভিন্ন খুদে গণপরিবহন।
শিক্ষার্থীরা কিন্তু কেউ ঘরে নেই করছে ঈদের বাজার :
ঈদের বাজার বা মার্কেটিং বেশ জমে উঠেছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা কিন্তু কেউ ঘরে নেই। তারা ঘুরছে, বেড়াচ্ছে। কেউ বা ঘুড়ি উড়াচ্ছে, ফুটবল, ক্রিকেট খেলছে। তবে কন্যাশিশুদের খুব কম চোখে পড়ে। বাবা-মায়েরা তাদের সাথে করে নিয়ে ঈদের মার্কেটিং করতে যাচেছন। জামালপুর পৌরসভাতেই বসবাস করেন প্রায় দুই লাখ মানুষ।
 দরিদ্র পরিবারের শ্রমের সন্ধানে ঘরের বাইরেেই
 দরিদ্র পরিবারের শিশুরাতো শ্রমের সন্ধানে ঘরের বাইরেেই থাকছে। অনেকেই মাস্ক পরেন না। যারা পরেন তাদের অধিকাংশই কানে বা থুতনির নিচে বা গলায় মাস্ক ঝুলিয়ে দিব্বি চলাফেরা করছেন।এই শহরের ফুটপাতের চায়ের দোকানে চলছে আড্ডা। বিকেল হলে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে নতুন বাইপাস সড়কে ভ্রমণপিয়াসী সব বয়সের মানুষের ভিড় জমে যায়।উন্মুক্তভাবে বসা ফুসকার দোকানগুলোতেও শুরু হয় বেশ জমিয়ে আড্ডা। বড়-ছোট সব খাবারের হোটেলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না।
ছয়টি উপজেলা জামালপুরে:
জেলার আরো ছয়টি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন রাতপোহালেই নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে শহরের আসছেন। তারা কাজ শেষে বা কাজের ফাঁকে বা মনের অজান্তে করোনাভাইরাস রেখে যাচ্ছেন এই শহরে। আবার অনেকেই শহর থেকে করোনাভাইরাস সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদে।
এই পরিস্থিতিতে কে কাকে দোষবেন। আমরা সবাই একাকার হয়ে গেছি। সুতরাং এই পরিস্থিতিতে আমি কারো সমালোচনা করে বিরাগভাজন হতে চাই না। শুধু এইটুকুই বলার চেষ্টা করলাম যে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবাই যে মরছে তা নয়, এখন পর্যন্ত জামালপুরে মরেছে মাত্র ১১ জন। আর অর্ধেকেরও বেশি আক্রান্ত ব্যক্তিরা সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু ১১ জনের পরিবারের সদস্যরা হাড়ে হাড়ে টের পাচেছন যে করোনাভাইরাস কি সাংঘাতিক ভয়াবহ ভাইরাস। ফ্রি-স্টাইলে চলাফেরা করলে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে, মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়লে দ্রুত অনেক মানুষ মারা যাবে।আবার দ্রুত অনেক মানুষ সুস্থও হবে। কিন্তু আক্রান্ত হওয়ার পর কে মারা যাবে, কে সুস্থ হয়ে উঠবে তা কিন্তু আমরা কেউ জানি না। আমরা শুধুই জানি আমরা সবাই বাঁচা-মরার প্রতিযোগিতার মধ্যে আছি।আসুন আমরা সবাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার চাইতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, আইন মেনে আর কিছুদিন বেঁচে থাকার চেষ্টা করি। অন্যদেরকেও আর কিছুদিন বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেই।

ছবি ও লেখাঃ সাংবাদিক মোস্তফা মনজু

No comments:

Post a Comment